স্বদেশ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ হিসেবে দেশে দেওয়া হচ্ছে ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। যারা বুস্টার ডোজ নেওয়ার যোগ্য, তারা আগের দুই ডোজে যে টিকাই নিয়ে থাকুন না কেন, তৃতীয় ডোজে তাদের দেওয়া হবে ওই তিন টিকার মধ্যে যেকোনো একটি।
তবে এক্ষেত্রে টিকাগ্রহিতার টিকা বেছে নেওয়ার সুযোগ নেই। যে আগে যে হাসপাতাল থেকে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, সেই হাসপাতাল থেকে তার কাছে বুস্টার ডোজের তারিখ জানিয়ে এসএমএস পাঠানো হবে। সেই কেন্দ্রে যে টিকা থাকবে, সেটাই তাকে নিতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বুধবার এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে, আজ বুধবার আরও কয়েকটি জেলায় বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো জেলাতেই বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে।
যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং যারা কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছেন, তাদের করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ছয় মাস পরে তারা বুস্টার ডোজ বা তৃতীয় ডোজ নিতে পারবেন।
গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় পরীক্ষামূলকভাবে বুস্টার ডোজ দেওয়ার শুরুর দিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল’ অনুসরণ করে দেশে বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে।
তবে মঙ্গলবার ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় বড় পরিসরে বুস্টার ডোজ দেওয়ার শুরুর দিন ফাইজারের পাশাপাশি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও দেওয়া হয়।
দেশে এখন প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম এবং সিনোভ্যাকের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজার, মডার্না অথবা অ্যাস্ট্রাজেনেকা দেওয়ার সুপারিশ করেছে ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল কমিটি-নাইট্যাগ।
নাইট্যাগের সুপারিশ অনুযায়ী, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ যে টিকাই দেওয়া হোক না কেন, তৃতীয় ডোজ হিসেবে ফাইজার, মডার্না অথবা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এদিকে, বুস্টার ডোজ কীভাবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি।
সব জেলা, উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকার টিকাদান কেন্দ্রে পাঠানো ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২৮ ডিসেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে সারা দেশে বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে।
এ প্রসঙ্গে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এসএমএস পাঠাতে দেরি হওয়ায় সব জায়গায় এক দিনে বুস্টার ডোজ শুরু করা যায়নি। পর্যায়ক্রমে তা শুরু হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার বাইরে ফরিদপুর, শরীয়তপুর, টাঙ্গাইল, কক্সবাজার, রংপুর, পঞ্চগড়, বাগেরহাট, মেহেরপুরে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সারাদেশে তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৩৫৫ জনকে। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৭ জনই ঢাকার।
এর আগে ১৯ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরুর দিন ৫৪ জন কোভিড টিকার তৃতীয় ডোজ পেয়েছিলেন।